Pregnancy
4 April 2023 আপডেট করা হয়েছে
শিশুর ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর যদি গর্ভ পরিশ্রবের নির্গত হওয়ায় দেরি হয়, তাহলে মাকে বমি করানোর চেষ্টা করা হয়। এক্ষেত্রে কেরোসিন তেলে ভেজানো চুলের গোছা গলার ভিতরে ঢুকানো হতো অথবা রসুন বাটা খাওয়ানো হতো। ঝাঁটার কাটি বা ছুচ দিয়ে রশি ছিদ্র করে সেটাকে তলপেটে রেখে অথবা ছোট নিচু চৌকি বা হাটু দিয়ে চাপ সৃষ্টি করে পরিশ্রব বার করা ছিল একটি প্রচলিত পদ্ধতি। এই সময়েও কিছু আছে আচার পালন করা হতো তালা খুলে ফেলা হতো, দরজার কবজা খুলে ফেলা হতো, সঞ্চিত ধানের আবরণ তুলে নেওয়া হতো। পরিশ্রব বার করার পর ফুল সংযোজক নারীর দুটো জায়গা এক টুকরো ছেঁড়া কাপড় বা সুতো দিয়ে বেঁধে দেওয়া হতো। সংযোগস্থলটি চকচকে বাসের বাকলের ধারালো টুকরো দিয়ে কাটা হত এবং ক্ষতস্থানে পোড়ামাটি বা ছাই এর প্রলেপ দিয়ে পট্টি বাধা হতো। পরিশ্রমটি মাটির পাত্রে অথবা কলা পাতায় রেখে মাটির গভীরে এমনভাবে পুঁতে ফেলা হতো যাতে তার দুষ্টু আত্মা বা জীবজন্তুর নাগালের বাইরে থাকে। বিশ্বাস ছিল যে এই পরিশ্রবে যদি কারোর ছোঁয়া লাগে তাহলে মায়ের দুধ শুকিয়ে যেতে পারে এবং তার ফলে নবজাত শিশুর বিভিন্ন পেটের অসুখ এমনকি মৃত্যু হতে পারে। কোন মাংসাশী জীবজন্তু যেন সেই পরিশ্রব পার করতে না পারে তাই অনেকেই ধাতবপাত্রের আবরণেও পরিশ্রব পুঁতে রাখত।
ভূমিষ্ঠ হবার পরেই শিশুর নাকের এবং কানের ফুটোতে কয়েক ফোঁটা সরষের তেল ঢোকানো হতো। জন্মের পরে শিশুর প্রথম খাদ্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মধু কারণ কোলাজ্রাম বা মায়ের দুধের আদি অবস্থা হজমের জন্য গুরু পাক বলে তা শিশুকে দেওয়া হতো না। স্নান করাবার পরে ছেলের ক্ষেত্রে ডান কানে ও মেয়ের ক্ষেত্রে বা কানে হালকা আযানের ধ্বনি বাজানো হতো এবং হিন্দুদের ক্ষেত্রে ছেলে জন্মালে বাজনা অথবা কাসর ঘন্টা বাজানো হতো। কুদৃষ্টির প্রভাব থেকে বাচ্চাটিকে মুক্ত করার জন্যই কপলের একদিকে কাজলের টিপ বা কালো ফোঁটা এখনো দেওয়া হয় এবং কোমরেও কালো সুতো জড়ানো হয়। অনেক মায়েরাই এর সঙ্গে সঙ্গে শিশুটিকে তাবিজও পরিয়ে দেয়। কথিত আছে শিশুর জন্মের পর পরই সেখানে আগুন জ্বালিয়ে রাখলে তা দুষ্ট আত্মাকে ধরে রাখে। আবার এই আগুনের পাত্রটি বিভিন্ন অঙ্গ সেঁকার কাজেও আসে, যা পেটের ক্ষতস্থানকে সারিয়ে তুলতে এবং জরায়ুকে গুটিয়ে আনতে সাহায্য করে। অনেক রকম কুসংস্কার থাকলেও প্রাচীন কালে মানুষের ব্যবহারিক বুদ্ধি অনেক বেশি ছিল যার প্রমাণ পাওয়া যায়, প্রসব এবং প্রসব পরবর্তীকালকের আচারের মাধ্যমে। প্রসবের পরে যে এই তাপ প্রয়োগ করা হতো তার কয়েকটি পদ্ধতি ছিল যেমন শুকনো মাটির দলাকে কাপড়ে জড়িয়ে হালকা ভাবে তলপেটে চেপে ধরা হতো অথবা মেঝের গর্তের মধ্যে বারো ধরনের মসলা পুরে আগুন জালানো হতো এবং ধোঁয়া বের হতে শুরু করলে গর্তটির ওপর মহিলা উভু হয়ে বসে পড়তো।
নতুন মায়ের খাদ্য ও স্বাস্থ্যের ব্যাপারে বিশেষ সতর্কতা নেওয়া হতো যাতে হজম কোনোভাবেই ব্যাহত না হয় এবং শিশুটির ক্ষেত্রেও কোনো রকমের অসুবিধা বা সমস্যা না হয়। তখনকার খাদ্যাভ্যাস আজও প্রসব পরবর্তীকালে নতুন মাদের ক্ষেত্রে অপরিহার্য হিসেবে বিবেচ্য হয়। চিকিৎসা বিদ্যা এই খাদ্যাভ্যাসকে অনুমোদিত করেছে কারণ চিকিৎসকও গরম খাদ্য, পাতলা ডাল, বড় মাছ, ডিম এবং মাংস কে খাদ্য তালিকায় রাখতে বলে। এছাড়াও ওই সময়ে বিভিন্ন ধরনের সবজি ও দই এবং শুকনো খাবার নতুন মাকে খাবার হিসেবে দেওয়া হয়। ভেষজ গুণ তখন এবং এখন একই রকম ভাবে স্বীকৃত; তাই বিভিন্ন রকমের শাকপাতা এই সময়ে নতুন মাকে খাওয়ানো হয় তার শরীরে শক্তি সঞ্চয় করার জন্য। অনেক সময় এক বিশেষ ধরনের সুপও দেওয়া হয় যা রাজ মানিকের পাতা, থানকুনি, আমতল, বাসক, ধানকলস, নিম, রজত দিয়ে আঠার মতন বানানো হয়। এরপর এতে জবাই করা পায়রা বা একটি শিঙি মাছ মেশানো হয়। প্রথমবার এই সুপ সাথেই মা ভাত খায়।
পেটের ঘা তাড়াতাড়ি সুকুমার জন্য মধু ও ঘি মিশ্রিত শুকনো গুড়ো করা নিমপাতা ব্যবহৃত হতো যা জরায়ু সংক্রান্ত বিভিন্ন অসুখ এড়াতেও সাহায্য করে। যাবতীয় বিধি বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চলে বহুল প্রচলিত, যদিও এ ধরনের প্রসবকালীন আচার অনুষ্ঠান বাংলাদেশের নগর এলাকায় এখন আর তেমন দেখতে পাওয়া যায় না। কিন্তু একথা ঠিক আদি সংস্কৃতিকে ধরে রাখা অপরিহার্য কারণ এর সাথেই নতুনের সংমিশ্রণে জাতির অগ্রগতি সম্ভব।
Yes
No
Written by
Atreyee Mukherjee
Get baby's diet chart, and growth tips
Mylo wins Forbes D2C Disruptor award
Mylo wins The Economic Times Promising Brands 2022
At Mylo, we help young parents raise happy and healthy families with our innovative new-age solutions:
baby test | test | baby lotions | baby soaps | baby shampoo |