Pregnancy
4 April 2023 আপডেট করা হয়েছে
নারীর কাছে মাতৃত্ব যেমন এক অন্যরকম অনুভূতি, ঠিক সেরকমই মাতৃত্ব শুধুমাত্র শুখানুভূতি নিয়ে আসে না, বরং এটা একজন নারীর এক বছরের জন্য পুরো জীবনযাত্রাটা বদলে দেয়। এই এক বছরের জন্য গর্ভবতী মহিলা সম্পূর্ণভাবে বদ্ধ জীবন যাপনে বাধ্য হন কারণ ডাক্তারি মতেই হোক বা লোকাচার মতেই হোক, এই সময়ে কোন নারী খুব একটা বাইরে যেতে পারেন না। গর্ভবতী মহিলার বাইরে যাওয়াকে একপ্রকার অন্যায় বলেই মনে করা হয়। বাঙালি সমাজ এখনো অব্দি পিতৃতান্ত্রিক সমাজ; কিন্তু মাতৃতান্ত্রিক সমাজ হলে হয়তো এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা কিছুটা হলেও লাঘব হতো। এখন অব্দি বাঙালি সমাজে মাতৃত্বটা কে প্রচন্ডভাবে গর্বান্বিত করা হয়, যার ফলে অনেক সময় একজন মায়ের ওপর অত্যধিক মানসিক চাপ পড়ে। এটা মনে করা হয় যে, একজন নারী যখন একজন মা হয়ে যান তখন তার নিজের জীবন বা ব্যক্তিগত জীবন বলতে কিছু থাকতে পারেনা। তিনি যা কিছুই করুন না কেন, সবকিছুই তার সন্তানের ভালোর জন্য হতে হবে এবং সন্তানের ভালোর জন্য বা সন্তানের জন্য একজন মাকে সব রকমের ত্যাগ শিকারের জন্য তৈরি থাকতে হবে। আর তখনই একজন মা কে মায়ের আক্ষায় ভূষিত করা যাবে। এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজের জন্য এমনকি পুরো জনন প্রক্রিয়াটিতে একজন মহিলার কোনো রকম নিয়ন্ত্রণ থাকত না, এখন চিকিৎসা শাস্ত্রের উন্নতির জন্য একজন মেয়ে যেমন ঠিক করতে পারে যে, সে মেয়ে মা হতে চায় কিনা বা কখন হতে চায় ইত্যাদি ব্যাপারগুলি। কিন্তু আগে একজন পুরুষই ঠিক করত যে, একজন মেয়ে বা আরো পরিষ্কার করে বলতে গেলে তার বউ ঠিক কখন মা হবে এবং এটাই মনে করা হতো যে বিয়ে হয়ে গেছে মানে একজন নারীর মূল কর্তব্য মা হওয়া এবং বংশকে সন্তান দেওয়া। সেখানে তার নিজের জীবন, ব্যক্তিগত ইচ্ছা-অনিচ্ছে কিছুরই কোন দাম থাকতো না। আবার উল্টো দিকে এটাও দেখা যেত আগের বাঙালি সমাজে যে যদি কোন ভাবে শ্বশুরবাড়ির লোকজন বুঝতে পারত যে, বাড়ির বউ মেয়ে সন্তানের জন্ম দিতে চলেছে, তাহলে সন্তানটিকে আগেই মেরে দেওয়া হতো বা অনেক সময় জন্মানোর পরে সেই সদ্যোজাত টিকে হয় মেরে ফেলা হতো অথবা কোথাও ফেলে আসা হতো কারণ মনে করা হতো একটি মেয়ের জন্ম একজন বাপের বোঝা স্বরূপ। এই ধারণা অবশ্য এখনো পুরোপুরি পাল্টায়নি।
লিঙ্গ নির্ধারণ যদিও আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ, তাও এখনো বিভিন্ন বেআইনি ক্লিনিকে এই পরীক্ষা করা হয় এবং যখনই মেয়েটির শ্বশুর বাড়ির লোকজন জানতে পারে যে তার গর্ভে মেয়ে সন্তান আছে, তখন তাকে মেরে ফেলার জন্য অনেক রকম প্রচেষ্টা চালায়। এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজ মাতৃত্বকে এতটাই বেশি গৌরবান্বিত করে ফেলে যে বেশিরভাগ সময়ই এটা একজন মহিলার কাছে যেন পুরস্কার স্বরূপ ছুটি হিসেবে ধরা দেয়। এ ধরনের অযৌক্তিক বা ঋণাত্মক প্রভাব থাকা সত্ত্বেও এটা অস্বীকার করা যায় না যে, বাঙালি সংস্কৃতি নান্দনিকতা, সংস্কৃতি, এবং ধর্মের এক অপূর্ব মিলন। মাতৃত্ব বাঙালি সমাজে এমন ভাবে প্রতিপালিত হয়, যে এটি একটি স্বর্গীয় শক্তির উল্লেখ করে। যেখানে ধরে নেওয়া হয় যে, মাতৃত্ব মানেই সব পেয়েছির দেশ বা সব অসম্ভবকে সম্ভব করার একজন মানুষ। তাই অনেক সময়ই মাতৃত্ব ত্যাগের নজির হয়ে দাঁড়িয়ে যায়। এক্ষেত্রে ত্যাগটা নিজের থেকে না হয়ে, সমাজের চাপে হয়ে থাকে।
বাঙ্গালীদের কাছে মা এমন একটা শব্দ আর তার মধ্যে এমনই একটা জোর আছে যে এই জোরটা শুধুমাত্র যে সামাজিক বা পারিবারিক জীবনে বদ্ধ থাকে তাই নয়, এটা জাতীয় ক্ষেত্রেও একইভাবে মন্ত্র হয়ে দাঁড়ায়। বাঙ্গালীদের মধ্যে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে মাতৃত্বকে শুধু যে ত্যাগের মাধ্যমে গৌরবান্বিত করা হয় তাই নয়, বরং এও বলা যায়, মাকে এতটাই বেশি সম্মান দেওয়া হয় যে নিজের দেশকেও মা সম্বোধন করা হয়। সেই জন্যেই যখন এই দেশ ব্রিটিশদের অধীনে পরাধীন ছিল, তখন সহজ হয় বাঙালি ছেলে নিজেদের প্রাণ দিতে পিছপা হয়নি শুধুমাত্র একথা ভেবে যে মায়ের শৃংখল মোচন সবথেকে আগে। তাই বাঙ্গালীদের কাছে মা শব্দের এক অন্যরকম যথার্থ যা এখনকার দিনে দাঁড়িয়েও বাঙ্গালীদের কে এক অন্যরকম গর্ববোধ করায়। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য যে সকল সাহসী বীর যোদ্ধাদের নাম পাওয়া যায়, তার মধ্যে বাঙ্গালীদের নাম গুনে শেষ করা যায় না আর এই অসম্ভব উদ্দীপনা, উৎসাহ, বা উদ্যমের পেছনের মূল শব্দটাই হচ্ছে মা।
মাতৃত্ব যে নারীকে সত্যিই এক শক্তি দেয়, এটা সর্বাংশে কখনোই ভুল বলে দাবি করা যায় না। এরম প্রমাণ প্রচুর আছে যেখানে একজন মা শুধুমাত্র সন্তানের জন্য এমন অনেক কাজ করেছে, যা স্বাভাবিক দৃষ্টিতে বা বাস্তব অর্থে দেখতে গেলে হয়তো অনুমান করাও সম্ভব নয়। প্রসবের সময়, যদি তা স্বাভাবিকভাবে হয়, সেক্ষেত্রে কয়েকশো হাড় ভাঙ্গার মতন ব্যথা হয় কিন্তু একজন নারী স্বেচ্ছায় সেই ব্যথা স্বীকার করে নেয় শুধুমাত্র একটা বাচ্চার জন্ম দেওয়ার জন্য। এ থেকেই বোঝা যায় যে, একজন নারী কতটা শক্তি নিজের মধ্যে ধারণ করে। উল্টোদিকে শল্যচিকিৎসার মাধ্যমেও যদি প্রসব হয়, সেক্ষেত্রেও ব্যথার অনুমান করা সম্ভব নয়। সব থেকে বড় ব্যাপার এই ব্যথা সেই নারীর মৃত্যুকাল পর্যন্ত থেকে যায় এবং সময় অসময়ে তা আরো বিভিন্ন রকম অসুবিধা সৃষ্টি করে। সব থেকে আশ্চর্যের বিষয় শল্যচিকিৎসার মাধ্যমে যখন প্রসব হয় একজন নারীর, তখন তার পেটের কয়েকটি স্তর কেটে বাচ্চা থেকে বের করা হয়। সাধারণ অর্থে কোন কাটা ছেড়ার ক্ষেত্রেই মানুষ ভীষণভাবে ভীত হয়ে যায় আর এখানে একজন নারী স্বেচ্ছায় তার পেটের কয়েকটি স্তর অবলীলায় কাটতে রাজি হয়ে যায় একটা বাচ্চার জন্ম দেওয়ার জন্য। তাই বাঙালি সমাজে মায়ের
Yes
No
Written by
Atreyee Mukherjee
Get baby's diet chart, and growth tips
গর্ভাবস্থায় সবেদা খাওয়া কি উচিত?
বাঙালি জাতি: সমাজে কর্ম, ভূমিকা, এবং অবস্থান
বাঙালি লোক কাহিনীতে মাতৃত্ব
প্রাচীন বাংলায় মাতৃত্ব
বাঙালি লোকাচারে সন্তান এবং মাতৃত্ব
শিশুর মুখের ক্ষত বা মাউথ থ্রাশ
Mylo wins Forbes D2C Disruptor award
Mylo wins The Economic Times Promising Brands 2022
At Mylo, we help young parents raise happy and healthy families with our innovative new-age solutions:
baby test | test | baby lotions | baby soaps | baby shampoo |